ঢাকা , সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
​ভুয়া বন্ধকদাতা সাজিয়ে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ ​৮০ পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে ইসির সংলাপ কাল ​ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের ছবি-অপমানজনক মন্তব্য সরানোর নির্দেশ ​গণতন্ত্র থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ নেই-আমীর খসরু ​খাল-জলাধার দখলকারী ভূমিদস্যুরাই এখন নেতা-রিজভী ​রাজধানীতে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে ১০৪৫ মামলা ​মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পীদের ধাওয়া দিয়ে পুকুরে ফেললো তৌহিদী জনতা ​যারা আল্লাহর ঘরের দায়িত্ব পালন করেন, তাদের অবস্থান অত্যন্ত সুদৃঢ়-ধর্ম উপদেষ্টা ​ভোলা লালমোহনের ১৩ জেলে পরিবারের আহাজারি ​কালিয়াকৈরে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইমাম গ্রেফতার ​মীরসরাইয়ে আগুনে পুড়ে ছাই ২৫শ’ ব্রয়লার মুরগি ​চুয়াডাঙ্গায় বাসের ধাক্কায় ভ্যানযাত্রী নারীর মৃত্যু আহত ২ ​পটিয়ায় মেরিট সান কে জি স্কুলে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত ​পাবনায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ১ ​পাবনায় ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত ১ কুষ্টিয়ায় এবার গ্রামীণ ব্যাংকের এরিয়া অফিসে আগুন এনসিপি সৎ প্রার্থীদের মনোনয়ন দিচ্ছে এটাই বড় চমক-নাসীরুদ্দীন ​শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট দুর্নীতির মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু ​৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে এনসিপি-নাহিদ ​নতুন বছরে যথাসময়ে সব বই পাবে না শিক্ষার্থীরা

​ভোলা লালমোহনের ১৩ জেলে পরিবারের আহাজারি

  • আপলোড সময় : ২৪-১১-২০২৫ ০২:১৩:০০ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৪-১১-২০২৫ ০২:১৩:০০ অপরাহ্ন
​ভোলা লালমোহনের ১৩ জেলে পরিবারের আহাজারি

ভোলা থেকে মো. এরশাদুল ইসলাম আজাদ
আল্লাহ তুমি আমার স্বামীকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দাও, তিনি ছাড়া আমরা কিভাবে চলবো, তিনি না থাকলে আমার গর্ভের বাচ্চাসহ প্রতিবন্ধী ছেলে ও মেয়েকে কে দেখবে। নিত্য প্রয়োজনীয় সহ অন্যান্য খরচের যোগান কে দেবে, আমরা কিভাবে থাকবো, কিভাবে বাঁচবো। এভাবেই অশ্রু ভেজা চোখে  নিখোঁজ স্বামীর কোনো সন্ধান না পেয়ে আহাজারি করছেন মোসা. রিপা বেগম নামের এক গৃহবধূ। তিনি ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার জেলে খোকনের স্ত্রী।    
তিনি বলেন, আমার স্বামী সাগরে ও মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে সেই উপার্জনের টাকা দিয়ে পরিবারের ভরণপোষণের যোগান দিতেন এবং প্রতিবন্ধী ছেলেসহ এক মেয়ে ও শশুর শাশুড়ি নিয়ে ৬ জনের  সংসার চালাতেন, বর্তমানে আমি সন্তান সম্ভবা। এখন আমার স্বামী সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে তার কোন খোঁজ মিলছে না। তিনি একা নয়, তার সঙ্গে ছিল আরো ১২ জন জেলে। তাদের কারোই কোন খোঁজ মিলছে না আজ পর্যন্ত। তাদের সঙ্গে কী হয়েছে তাও জানিনা। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি, তারা সবাই যেন নিরাপদে থাকে, আমারদের মাঝে ফিরে আসে।     
জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকা ও বাতির খাল মাছ ঘাট এলাকা থেকে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে একটি ফিশিং বোটে করে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ১৩ জেলে। ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির মা-বাবার দোয়া নামের একটি বোটে করে ১১ নভেম্বর চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মৎস্য ঘাটে পৌঁছে। সেখান থেকে বোটের জন্য ডিজেল সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে  বঙ্গপসাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন জেলেরা। যাত্রার ৬ দিনের মধ্যে তাদের আবার ফেরার কথা থাকলেও গত ১৩ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাদের কোন সন্ধান মিলেনি এবং কোনো ভাবেই ঐসব ছেলেদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেনা তাদের স্বজনরা। এতে করে আহাজারি ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ঐসব জেলেদের পরিবারে মাঝে। নিখোঁজ জেলেরা হলেন, ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মো. মাকসুদুর রহমান, মো. খোকন, মো. হেলাল, মো. শামীম, মো. সাব্বির, মো. সজিব, মো. জাহাঙ্গীর, মো. নাসির মাঝি এবং একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাতির খাল এলাকার আব্দুল মালেক, মো. ফারুক, মোহাম্মদ মাকসুদ, মো. আলম মাঝি, মোহাম্মদ ফারুকসহ মোট ১৩ জন জেলে। নিখোঁজ জেলে হেলালের স্ত্রী মিতু বেগম বলেন, আমার স্বামী সগরে যাওয়ার সময় বলেছিলেন নিজের এবং সন্তানের খেয়াল রাখিও। তাকে বলেছিলাম আমি বাবার বাড়ি বেড়াতে যাবো, তিনি বলেছে সাগর থেকে ফিরে তিনি সহ একসঙ্গে সবাই একসাথে বেড়াতে যাবেন। এখন তারই কোনো খোঁজখবর নেই। তাকে ছাড়া আমার সন্তানের এবং বৃদ্ধ শ্বশুর শাশুড়ির কে দেখাশোনা করবে। আমরা কিভাবে আগামীর পথ চলবো। আমার স্বামীকে ফিরে পেতে প্রশাসন ও সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। মাকসুদুর রহমান নামের নিখোঁজ আরেক জেলের ছেলে মো. নয়ন জানান, সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার পর ৬ দিনের মধ্যে সবার ফেরার কথা, কিন্তু ১৩ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে, এখনো কেউ ফিরে এলো না। আমার বাবাকে ছাড়া আমরা কিভাবে চলবো। তিনি আরো জানিয়েছেন, আমার বাবা সহ ১৩ ছেলেকে খুঁজতে গত শনিবার (২২ নভেম্বর) একটি ট্রলার যোগে সাগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন প্রত্যেক জেলের আত্মীয়-স্বজনরা। আমার বাবাসহ সকল জেলেকে না পাওয়ার বিষয়টি ইতিমধ্যে আমরা বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী, কোস্ট গার্ড ও থানা পুলিশকে জানিয়েছি।  তবে তারা এখনো কোথায় রয়েছেন, কিভাবে আছেন, তাদের সঙ্গে কি ঘটেছে, আমরা কিছুই জানিনা। তাই আমরা প্রত্যেক পরিবার প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতায় আমার বাবাসহ অন্যান্য জেলেদেরকে অতি শীঘ্রই আমাদের মাঝে যে কোনো মূল্যে ফেরত পেতে চাই। এই বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি তদন্ত মো. মাসুদ হাওলাদার বলেন, এই ঘটনায় থানায় এখন পর্যন্ত কেউ বা কারো পরিবার কোন অভিযোগ বা জিডি করেনি। তবুও আমরা বিষয়টি জানার চেষ্টা করবো। লালমোহন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমেদ আখন্দ জানান, জেলেদের নিখোঁজের সংবাদটি আমরা পেয়েছি। তবে কতজন জেলে নিখোঁজ রয়েছে তা এখনো সঠিকভাবে জানা যায়নি। আমরা বিভিন্ন ভাবে ওইসব ছেলেদের অবস্থান জানার চেষ্টা করছি ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য